মুসলমান ঘরে জন্ম নিলে অনেক কিছু দেখে দেখে শেখা যায় এবং শেখা হয়ে যায়। আবার কিছু ভুল শেখা হয় সেগুলো সংশোধন করতে হয় জ্ঞান অর্জনের মাধ্যেমে । রোযা ভঙ্গের কারণ , অযু ভঙ্গের কারণ , নামাজ ভঙ্গের কারণ সবার জানা থাকলেও ঈমান ভঙ্গের কারণ সবার জানা নাই । ঈমান যে ভাঙ্গে এটাই সবার জানা নাই । ঈমান না থাকলে আমলের কোনো মূল্য নেই । ঈমান ভঙ্গের কারণ অনেক থাকলেও প্রধান কারণ ১০ টি ।
এ পোস্টে যা আছে –
- প্রথম ঈমান ভঙ্গের কারণ
- দ্বিতীয় ঈমান ভঙ্গের কারণ
- তৃতীয় ঈমান ভঙ্গের কারণ
- চতুর্থ ঈমান ভঙ্গের কারণ
- পঞ্চম ঈমান ভঙ্গের কারণ
- ষষ্ঠ ঈমান ভঙ্গের কারণ
- সপ্তম ঈমান ভঙ্গের কারণ
- অষ্টম ঈমান ভঙ্গের কারণ
- নবম ঈমান ভঙ্গের কারণ
- দশম ঈমান ভঙ্গের কারণ
- শিরকে আকবর
- কাফের যারা
- এক নজরে ঈমান ভঙ্গের কারণ সমূহ
১. প্রথম ঈমান ভঙ্গের কারণ
ইবাদত শিরক মুক্ত হতে হবে । শিরক যুক্ত ইবাদত আল্লাহ্ কবুল করেন না এবং যারা শিরক করে তাদেরকে আল্লাহ্ ক্ষমা করবেন না ।অন্যান্য ভুলের জন্য বা পাপের জন্য আল্লাহ্ নিকট তাওবা না করলেও ক্ষমা করতে পারেন কিন্তু শিরকের জন্য তাওবা করতে হবে । এটা ঈমান ভঙ্গের প্রথম কারণ ।
আল্লাহ্ বলেন-
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁর সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না এবং এ ছাড়া যাকে ইচ্ছা তিনি যে কোনো পাপ ক্ষমা করে দেন ।
সূরা নিসা ৪:৪৮
যে আল্লাহর সাথে শিরক করবে সে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে । জান্নাত তার জন্য হারাম হয়ে যাবে ।সে জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবে না ।
আল্লাহ্ বলেন-
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর সাথে শরিক করে আল্লাহ্ তাদের জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন । তাদের বাসস্থান হবে জাহান্নাম আর জালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই ।
সূরা মায়েদা ৫:৭২
শিরক দুই প্রকারঃ
১. শিরকে আকবর (বড় শিরক)
২. শিরকে আজগার ( ছোট শিরক )
আল্লাহ্ তায়ালা এখানে শিরকে আকবর এর কথা বলেছেন ।
শিরকে আকবরঃ
ক) আল্লাহ্ ছাড়া কারো উদ্দেশ্যে যবেহ করা ।
খ) আল্লাহ্ ছাড়া কারো জন্য মানত করা ।
গ) আল্লাহ্ ব্যতীত জীবিত বা মৃত কাউকে সেজদা করা ।
ঘ) জীবিত বা মৃত ব্যক্তির নিকট সাহায্য চাওয়া বা দু’আ করা ।
ঙ) আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো ব্যক্তি, প্রাণী বা বস্তুর উদ্দেশ্যে ইবাদত করা ।
যদি কেউ এই কাজগুলোর সাথে সম্পৃক্ত থাকে তাহলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে । সে মুসলমান থাকে না । তাঁর ঈমান ভেঙ্গে যাবে ।
আল্লাহ্ বলেন-
আর জীন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার ইবাদত করবে ।
সূরা যারিয়াত ৫১:৫৬
মহান আল্লাহ্ বলেন-
তোমরা ইবাদত কর আল্লাহর , তাঁর সাথে কোনো কিছুকে শরীক করে না ।
সূরা নিসা ৪:৩৬
অন্যত্র আল্লাহ্ বলেন-
আর তারা আল্লাহ্ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদত করছে, যা তাদের ক্ষতি করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না । আর তারা বলে এরা আল্লাহর নিকট সুপারিশকারী ।
সূরা ইউনুস ১০:১৮
শিরক এতো ভয়াবহ যে সারা জীবনের আমল নিমেষে নষ্ট হয়ে যাবে শুধুমাত্র শিরক করার কারণে ।
আল্লাহ্ বলেন-
যদি তারা শিরক করত , তবে তাদের সকল আমলই নিষ্ফল হয়ে যেত ।
সূরা আন আম ৬:৮৮
ঈমান ভঙ্গের যত কারণ আছে শিরক তার মধ্যে অন্যতম । শিরক করলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় । তার আমল , আমল হিসেবে গণ্য হয় না । ঈমান ভেঙ্গে যায় এবং তাকে নতুন করে ঈমান আনতে হবে ।কবীরা গুনাহের মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহ শিরক ।
শিরক আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবেশ করে আছে । আমরা যদি সচেতন না হই তাহলে আমাদের নামায, রোযা , হজ্জ, যাকাত , তাহাজ্জুদ দান-সদকা কোনো কাজে আসবে না । এই সব ইবাদত শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা আর কিছু হবে না ।
২. দ্বিতীয় ঈমান ভঙ্গের কারণ
যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ্ ও তার মধ্যে কাউকে কোনো মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে তাদের কাছে দু’আ করে শাফা’আত চায় তাদের উপর নির্ভর করে তবে সর্বসম্মতিক্রমে সে কাফির হয়ে যাবে । এটা দ্বিতীয় ঈমান ভঙ্গের কারণ ।
আল্লাহকে ডাকতে হবে সরাসরি । কোনো মধ্যমের প্রয়োজন নেই । কোনো মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন নেই ।
আল্লাহ্ বলেন-
আর তোমাদের রব বলেছেন , তোমরা আমাকে ডাক , আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব ।
সূরা আল -মুমিন ৪০:৬০
৩. তৃতীয় ঈমান ভঙ্গের কারণ
যে ব্যক্তি মুশরিকদের কাফির মনে করল না অথবা তাদের কাফের হওয়ার ব্যপারে সন্দেহ পোষণ করল অথবা তাদের ধর্ম ও জীবন ব্যবস্থাকে অনুসরণযোগ্য মনে করল, সে কাফির বলে বিবেচিত হবে। এটা একটা ঈমান ভঙ্গের কারণ ।
কাফের যারা
![ঈমান ভঙ্গের কারণ](https://rezatang.com/wp-content/uploads/2021/12/কাফের-যারাঃ.png)
আল্লাহ্ বলেন-
অবশ্যই তারা কুফরী করেছে যারা বলে নিশ্চয়ই মারিয়মের পুত্র মাসীহই আল্লাহ্ ।
সূরা মায়েদা ৫:১৭
আল্লাহ্ আরো বলেন-
নবী ও মুমিনদের জন্য উচিত নয় যে , তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে । যদিও তারা আত্মীয় হয় । তাদের নিকট এটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর যে, নিশ্চয়ই তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী । নিজ পিতার জন্য ইবরাহীমের ক্ষমা প্রার্থনা তো ছিল একটি ওয়াদার কারণে , যে ওয়াদা সে তাকে দিয়েছিল । অতঃপর যখন তার নিকট স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নিশ্চয়ই সে আল্লাহর শত্রু , সে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল । ইবরাহীম তো অতিশয় কোমল হৃদয় এবং সহনশীল ।
সূরা আত -তাওবা ৯:১১৩-১১৪
৪. চতুর্থ ঈমান ভঙ্গের কারণ
যে ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শের চেয়ে অন্য কারো আদর্শ অধিক উপযুক্ত বা উত্তম মনে করবে সে কাফির হয়ে যাবে । যেমন যদি কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হুকুমের চেয়ে তাগুতের হুকুমকে প্রাধান্য দেয় সেও কাফির হয়ে যাবে । এটা ঈমান ভঙ্গের চতুর্থ কারণ ।
তাগুত অর্থ- আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি , বস্তু বা জীবের উপাসনা করা প্রভু হিসাবে মেনে নেওয়া নাম তাগুত ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন পরিপূর্ণ এবং শ্রেষ্ঠ মানব । তাকে অনুসরণ করতে হবে ।
কুরআন ও হাদীসে তাকে অনুসরণ করার কথা বার বার বলা হয়েছে ।
আল্লাহ্ বলেন-
রাসূল তোমাদের যা দেন তা গ্রহণ কর , আর যা থেকে তিনি তোমাদের নিষেধ করেন তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর । নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শান্তি প্রদানে কঠোর ।
সূরা হাশর ৫৯:৭
অন্যত্র আল্লাহ্ বলেন-
সে মনগড়া কথা বলে না । তা তো কেবল ওহী যা তার প্রতি ওহীরূপে প্রেরণ করা হয় ।
সূরা আন নাজম ৫৩:৩-৪
রাসূলকে অনুসরণ করলে আল্লাহকে অনুসরণ হবে । তাই আল্লাহ্ বলেন-
যে ব্যক্তি রাসুলের হুকুম মান্য করল সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল । আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করল , আমি আপনাকে তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি ।
সূরা নূর ২৪:৫৪
মহান আল্লাহ্ রাসূলের চরিত্রের ব্যপারে বলেন-
আর নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের উপর অধিষ্ঠিত ।
সূরা আল কালাম ৬৮:৪
রাসূলের আদর্শের হাদীস থেকে জানতে পারি
>>আয়িশা ( রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন –
তোমাদের মাঝে সেই ভালো যে তার পরিবারের নিকট ভালো । আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চেয়ে উত্তম । আর তোমাদের কোন সঙ্গী মৃত্যবরন করলে তার সমালোচনা পরিত্যাগ করো ।
সূনান আত তিরমিজী ( তাহকীককৃত) ,অধ্যায়- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগনের মর্যাদা , হা. ৩৮৯৫
>> মসজিদে পেশাব করার পরও বেদুঈনের সাথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সুন্দর আচরণ করেছেন তা পৃথিবীর ইতিহাসে নজির বিহীন ঘটনা ।
যুহায়র ইবনু হারব ( রহঃ) …… ইসহাকের চাচা আনাস ইবনু মালিক ( রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, একবার আমরা মসজিদে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে বসেছিলাম ইতিমধ্যে এক বেদুঈন এল । সে দাঁড়িয়ে মসজিদেই পেশাব করতে লাগল । তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ বলতে লাগল “ থাম থাম “ । রাবী বলেন তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমরা তাকে বাধা দিও না , ছেড়ে দাও ওকে । অতঃপর তাকে ছেড়ে দিল, সে পেশাব করা শেষ করল ।
তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে বললেন-
দেখ এই যে মসজিদগুলো এতে পেশাব করা বা একে কোন রকম নাপাকি করা উচিৎ নয় । এসব তো কেবল আল্লাহ্র জিকির করা সালাত ( নামাজ/ নামায) আদায় করা এবং কুরআন তিলাওয়াত করার জন্য । অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ধরনের কিছু বলেছিলেন । রাবী বললেন , অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাওমের কোন এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দিলেন, সে এক বালতি পানি নিয়ে এলো । তিনি তা তার উপর ঢেলে দিলেন ।
সহীহ মুসলিম হা. ৫৫৪ (ই.ফা.) , অনুরূপ সহীহ বুখারী ২১৯ ( ই.ফা.)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন । তাঁর আদর্শ আমাদের অনুসরণ করতে হবে । সে যে ভাবে জীবন পরিচালনা করেছেন সে আমাদের জীবনকে পরিচালনা করতে হবে । রাসুলের আদর্শ রেখে অন্য কারো আদর্শকে উত্তম মনে করে পালন করলে ঈমান ভেঙ্গে যাবে এবং সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে ।
৫. পঞ্চম ঈমান ভঙ্গের কারণ
যদি কোনো ব্যক্তি ইসলামের কোনো বিধি – বিধান অপছন্দ করে কিংবা অপ্রয়োজনীয় মনে করে অথবা ঘৃণা করে তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে, যদিও সে নিজে তা আমল করে । এটা পঞ্চম ঈমান ভঙ্গের কারণ ।
আল্লাহ্ বলেন
নিশ্চয়ই আল্লাহ্র নিকট দীন হচ্ছে ইসলাম ।
সূরা আল ইমরান ৩:১৯
ইসলাম ছাড়া আল্লাহ্র নিকট অন্য কোন দীন গ্রহণযোগ্য নয় ।
মহান আল্লাহ্ আরো বলেন-
আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন চায় তাঁর কাছে থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবে ।
সূরা আল ইমরান ৩:৮৫
৬. ষষ্ঠ ঈমান ভঙ্গের কারণ
ইসলাম ধর্মে ঘোষিত কোন সাওয়াব বা শাস্তির বিধান নিয়ে যদি কেউ উপহাস, ঠাট্টা- বিদ্রূপ বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে তবে সেও কাফির হয়ে যাবে । এটা ৬ষ্ঠ ঈমান ভঙ্গের কারণ ।
আল্লাহ্ বলেন-
বল , আল্লাহ্ তাঁর আয়াত সমূহ ও তাঁর রাসূলের সাথে তোমরা বিদ্রূপ করছিলে ? তোমরা ওজর পেশ করো না । তোমরা তোমাদের ঈমানের পর অবশ্যই কুফরী করেছ ।
সূরা আত তাওবা ৯:৬৫-৬৬
৭. সপ্তম ঈমান ভঙ্গের কারণ
জাদু করে কাউকে কোন কিছু থেকে বিরত রাখা কিংবা কোন কিছুর প্রতি আকৃষ্ট করা । যে কাজটি করবে কিংবা কাজটি করতে সম্মতি দিবে , সেও কাফির হয়ে যাবে । এটা ৭তম ঈমান ভঙ্গের কারণ ।
আল্লাহ্ বলেন-
আর এদুই ফেরেশতা কাউকে জাদু শিক্ষা দিত না একথা না বলা পর্যন্ত যে, নিশ্চয়ই আমরা ফিতনা । সুতারাং তোমরা কুফরী করো না ।
সূরা বাকারা ২:১০২
![ঈমান ভঙ্গের কারণ](https://rezatang.com/wp-content/uploads/2021/12/IMG20210831082053-removebg-preview.png)
আজকাল রাস্তা –ঘাটে, বাসে, টেলিভিশনে বিভিন্ন রকমের বিজ্ঞাপন দেখা যায় যা জাদু দ্বারা করে থাকে । মুসলিমরা এখানে নিরব কেউ কোন কথা বলে না । আমাদের সহজ সরল মুসলিম ভাই বোনেরা এদের দ্বারা ঈমান হারাচ্ছে । সবাইকে সচেতন হতে হবে শয়তানি কর্মকান্ড সম্পর্কে ।
![ঈমান ভঙ্গের কারণ](https://rezatang.com/wp-content/uploads/2021/12/ISLAMIC-WOLRD-1.png)
৮. অষ্টম ঈমান ভঙ্গের কারণ
মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির মুশরিকদের পক্ষপাতিত্ব করা এবং তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করা । ঈমান ভঙ্গের আরেকটি কারণ । এটা ৮ম ঈমান ভঙ্গের কারণ ।
আল্লাহ্ বলেন-
তোমাদের মধ্যে থেকে যারা তাঁদের সাথে বন্ধুত্ব করে তাএয়া তাঁদের দলভুক্ত বলে বিবেচিত হবে । নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সীমালংঙ্কারী সম্প্রদায়কে সঠিক পথের দিক নির্দেশনা দেন না ।
সূরা আল মায়েদা ৫:৫১
৯. নবম ঈমান ভঙ্গের কারণ
যে ব্যক্তি একথা বিশ্বাস করে যে, কিছু লোকের জন্য ইসলামি শরী’আ থেকে বের হওয়ার অনুমতি রয়েছে – যেমন মুসা (আঃ) এর শরী’আ থেকে খিজির আলাইহিস সালাম বের হয়ে গিয়েছিলেন তাহলে সেও কাফির বলে গণ্য হবে । এটা ঈমান ভঙ্গের নবম কারণ ।
আল্লাহ্ বলেন-
বল হে মানুষ, আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসূল যার রয়েছে আসমান সমূহ ও জমিনের রাজত্ব । তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই । তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন ।সুতারাং তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন ও প্রেরিত উম্মী নবীর প্রতি, যে আল্লাহ্ ও তার বাণী সমূহের প্রতি ঈমান রাখে । আর তোমরা তার অনুসরণ কর , আশা করা যায় , তোমরা হিদায়াত লাভ করবে ।
সূরা আলা আরাফ ৮:১৫৮
আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর লোক আছে যারা ইসলামি শরী’আ মেনে চলে না অথচ তারা নিজেদেরকে মুসলমান দাবী করে ।তারা বলে শরী’আতের এমন স্তর রয়েছে যেখানে পৌছে গেলে শরী’আ মানার প্রয়োজন হয় না । এরা ভণ্ড সুফি, এদের ঈমান নেই । এরা আসলে কাফের ।
১০. দশম ঈমান ভঙ্গের কারণ
মহান আল্লাহর দীন থেকে মূখ ফিরিয়ে নেওয়া, দীনের শিক্ষা গ্রহণ না করা কিংবা শিক্ষা থাকলেও সে অনুযায়ী আমাল না করা । এটা ঈমান ভঙ্গের দশম কারণ ।
আল্লাহ্ বলেন-
তার চেয়ে বড় জালিম আর কে যাকে স্বীয় রবের আয়াতসমূহের মাধ্যমে উপদেশ দেওয়া পর তা থেকে মূখ ফিরিয়ে নেয় ? নিশ্চয়ই আমি অপরাধীদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী ।
সূরা আস সাজদা ৩২:২২
এক নজরে ঈমান ভঙ্গের কারণ সমূহ –
![ঈমান ভঙ্গের কারণ](https://rezatang.com/wp-content/uploads/2021/12/ঈমান-ভঙ্গের-১০-টি-কারণ-2-1.png)
প্রতিটি মুসলমানের ঈমান ভঙ্গের কারণ সমূহ বিস্তারিত জানা উচিত । আমাদের ঈমান যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে আমাদের ইবাদত কোন কাজে আসবে না । আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে ঈমান ভঙ্গের কারণ সমূহ থেকে । আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে বিশুদ্ধ ঈমানে উপর মৃত্যু পর্যন্ত অটল থাকার তাওফিক দান করুন ।
আরো পড়ুনঃ
![ম্যাসেজ -মিজানুর রহমান আযহারিmessages-mizanur rahman azhari](https://rezatang.com/wp-content/uploads/2021/06/manuserr.jpg)
জুমার দ্বিতীয় আজানের জবাব দিতে হয়?
ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
AddThis Sharing Buttons
Share to Twitter
Share to LinkedInShare to WhatsAppShare to MessengerShare to Facebook
জুমার দ্বিতীয় আজানের জবাব দিতে হয়? আবুধাবির বিশ্ববিখ্যাত মসজিদ। ছবি: সংগৃহীত
প্রশ্ন: জুমার দিন খুতবার আগে যে আজানটি দেওয়া হয়, সেটির জবাব দিতে হয়? বিষয়টি বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর: নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী জুমার দ্বিতীয় আজানের জবাব দেয়া জায়েজ। হাদিস শরিফে আবু উমামা ইবনে সাহল ইবনে হুনাইফ (রহ.) বলেন, আমি মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.)-কে মিম্বরের উপর বসা অবস্থায় দেখেছি, মুয়াজ্জিন যখন আজানে আল্লাহু আকবার বললেন তখন তিনিও আল্লাহু আকবার বলেছেন…।
এরপর আজান শেষ হলে তিনি বললেন, হে লোক সকল! আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এই মজলিসে অর্থাৎ যখন মুয়াজ্জিন আজান দেন- এমনটিই বলতে শুনেছি, যেমনটি আপনারা আমাকে বলতে শুনলেন। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ৯১৪)
অন্য বর্ণনায় সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব (রহ.) বলেন, ‘ইমাম খুতবার জন্য বের হলে নামাজ পড়া যাবে না আর ইমাম খুতবা শুরু করলে কথা বলা যাবে না। ’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং: ৫৩৩৯)
তবে খুতবার সময় যেহেতু চুপ থাকা ওয়াজিব, তাই ইমাম যদি আজানের পরে সঙ্গে সঙ্গে খুতবা শুরু করে দেন, তবে আজানের পর দোয়া পড়া যাবে না। কিন্তু ইমাম খুতবা শুরু করতে দেরি করলে আর আজান ও খুতবার মাঝখানে সময় পাওয়া গেলে আজানের পরের দোয়া পড়াও সুন্নত হিসেবে গণ্য হবে।
আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘তোমরা যখন মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শুনবে, তখন সে যা বলে তাই বলবে। তারপর আমার ওপর দুরূদ পাঠ করবে। কারণ যে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার বিনিময়ে তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করেন। পরে আল্লাহর কাছে আমার জন্য ওসিলার দোয়া করবে। ওসিলা হলো জান্নাতের একটি বিশেষ স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কোনো এক বান্দাকে দেওয়া হবে। আমি আশা করি যে, আমিই হবো সেই বান্দা। যে আমার জন্য ওসিলার দোয়া করবে, তার জন্য আমার শাফাআত ওয়াজিব হয়ে যাবে। (মুসলিম, হাদিস নং: ৭৩৫)
সার্বিক তথ্য: (ফাতহুল বারি: ২/৪৬০; ইলাউস সুনান ২/৮০; আসসিআয়াহ: ২/৫৩; হাশিয়াতুত তহতাবি আলালমারাকি: ২৮২; আততাজরিদ: ২/৪৭৭; আলমুগনি, ইবনে কুদামা: ৩/২০০)
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি মুহাম্মাদ শোয়াইব, সহকারী মুফতি, জামিয়া রহমানিয়া সওতুল হেরা, টঙ্গী, গাজীপুর। সম্পাদক, আরবি ম্যাগাজিন মাসিক ‘আলহেরা’।
ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
এমএমইউ
আ
Pingback: ঈমানের চতুর্থ আরকানঃ নবী রাসূলগনের প্রতি ঈমান - islamic world
Pingback: ঈমানের শাখা সমূহ-১ম পর্ব - islamic world
Pingback: ঈমানের শাখা সমূহ-২য় পর্ব - islamic world
Pingback: অহংকার মানব জীবন ধ্বংসের অন্যতম কারণ - islamic world
Pingback: মানব ইতিহাসের প্রথম সালাম এবং এর গুরুত্ব ও আদব - islamic world