মহাগ্রন্থ কুরআন এ ১১৪ টি সূরা, ৩০ টি পারা, ১৫ টি সেজদা, ৭ টি মনজিল আছে। সমগ্র কুরআনে আয়াত সংখ্যা ৬ হাজারের বেশি হলেও মর্যাদার দিক দিয়ে সব সমান নয় । আয়াতুল কুরসী এমন একটি আয়াত যা মর্যাদার দিক থেকে সবার চেয়ে বেশি ।
আয়াতুল কুরসী :
“আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।“
আয়াতটি সূরা বাকরার ২৫৫ নং আয়াত (২;২৫৫)
অর্থাৎ পারা- ৩য় , আয়াত-৩য়
আয়াতটি সবার কাছে আয়াতুল কুরসী নামে পরিচিত ।
আয়াতুল কুরসীর মর্যাদা
আয়াতুল কুরসীর মর্যাদা আমরা হাদীস থেকে জানতে পারি-
হাদীস
” উবাই ইবনু কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, হে আবূল মুনযির ! তুমি জান কি তোমার কাছে যে আল্লাহর কিতাব রয়েছে এর কোন আয়াতটি সর্বাপেক্ষা মর্যাদাবান ? উবাই (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ্ এবং তার রাসূল (সাঃ) অধিক জ্ঞাত । নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম(আবার) বলেন, হে আবুল মুনযির তুমি জান কি, তোমার কাছে আল্লাহর যে কিতাব রয়েছে এর কোন আয়াতটি সর্বাপেক্ষা মর্যাদাবান ? উবাই(রাঃ) বলেন আমি বললাম —-
উবাই(রাঃ) বলেন, তখন নবী(সাঃ) আমার বুকে হাত মেরে বলেন, আবুল মুনযির ! মুবারক হোক তোমার জন্য ইলম ।”১
১. সহি মুসলিম (হাদীস একাডেমী হাদিস নং ৮১০, ই ফা ১৭৫৫, ইসলামিক সেন্টার ৮১৯)
আল্লাহর ইসমে আজম রয়েছে আয়াতুল কুরসীতে
হাদীস
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তিনটি আয়াতের মধ্যে আল্লাহ্ তা’আলার ইসমে আযম রয়েছে ।”০২
একটি আয়াতুল কুরসী
০২. আহমদ ৬/৪৬১,আবূ দাউদ ২/১৬৮,তিরমিযী ৯/৪৪৭ ,মাজাহ ২/১২৬৭
আয়াতুল কুরসীর ফজিলত
আয়াতুল কুরসীর ফজিলত অনেক যা নীচে কয়েকটি দেওয়া হলো-
১। আবু উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি প্রত্যেক সালাতের পরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না ।“০৩
হাদীসটি হাসান
০৩. নাসাঈ,আস-সুনানুল কুবরা ৬/৩০,হাইসামী ,মাজমাউয যাওযাইদ ২/১৪৮,১০/১০২, মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৪৪৮
২। হাসান (রাঃ) বলেন ,রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন-
“যে ব্যক্তি ফরয সালাতের শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে সে পরবর্তী সালাত পর্যন্ত আল্লাহর জিম্মায় থাকবে ।“০৪
ইমাম মুনযিরী ও হাইসামী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন ।
০৪.তাবারনী, কাবীর ৩/৮৩,হাইসামী মাজমাউয যাওয়াইদ ২/১৪৮,১০/১০২, মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৪৪৮
৩। আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন-
“কেউ রাতে বিছানায় শয়ন করার পরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে সারা রাত আল্লাহ্ পক্ষে থেকে তাঁকে হেফাযত করা হয় এবং কোনো শয়তান তাঁর কাছে আসতে পারে না ।“০৫
০৫. বুখারী(৪৫ কিতাবুল ওয়াকালা, ১০ বাব ইযা ওয়আক্কালা রাজুলান–)২/৮১২ ,(ভা১/৩০৯) ইসলামিক ফা; অনুচ্ছেদ -১৪৩৮
আয়াতুল কুরসিতে রয়েছে ১০ টি পূরনাংগ বাক্য (চলবে)
Alhamdu Lillah.
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।