ঈমানের শাখা সমূহ-১ম পর্ব

Loading

প্রতিটি মুসলমানের ঈমান সম্পর্কে প্রথমে জ্ঞান অর্জন করা উচিত। আমরা প্রথমে ঈমানের জ্ঞান লাভ না করে আমলের দিকে চলে যাই যদিও আমাদের ঈমান সম্পর্কে জ্ঞানের পরিধি প্রায় শুন্য। ঈমানের শাখা সমূহ সম্পর্কে অনেকই জ্ঞাত নই এবং জানার ইচ্ছাও আমাদের মাঝে নেই। আমরা ঈমান শাখা সমূহ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

এ পোষ্টে যা আছে

ঈমানের প্রসঙ্গে আল কুরআনে আল্লাহ্‌ বলেন,

ঈমানঃ শরীয়তের পরিভাষায় ঈমানঃ মনে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা কার্যে পরিণতি করা ।

হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা একজন আহ্বানকারীকে ঈমানের দিকে আহ্বান করতে শুনছি; তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনয়ন কর’ সুতারাং আমরা ঈমান আনয়ন করছি।

সূরা আল ইমরান (৩)ঃ আয়াত ১৯৩

কুরআন ও সহীহ হাদীস থেকে যে সব তথ্য পাওয়া তার ভিত্তিতে বলা যায় ঈমানের শাখার সংখ্যা জানার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্‌।

হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি,

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন,

একদিন নবী সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোক জনের মধ্যে ছিলেন। এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি ( জিবরাইল আঃ) তাঁর নিকট আগমন করে বলেন,

ঈমান কী?

তিনি উত্তরে বলেনঃ (ঈমান এইযে) তুমি বিশ্বাস করবে আল্লাহ্‌র, তাঁর ফিরিশতাগণে, তাঁর পুস্তকসমূহে, তাঁর সাক্ষাতে, তাঁর রাসূলগণে এবং তুমি বিশ্বাস করবে তাকদীর বা নির্ধারণের সবকিছুতে।

তিনি প্রশ্ন করেনঃ

ইসলাম কী?

তিনি বলেনঃ ইসলাম এইযে , তুমি আল্লাহ্‌র ইবাদত করবে, কোনো কিছুকে তাঁর সাথে শরীক বানাবে না, সালাত কায়েম করবে, ফরয যাকাত প্রদান করবে এবং রমদানের সিয়াম পালন করবে।

বুখারী শরীফ, ঈমান অধ্যায় হা/৪৮ (ই.ফা.বা), মুসলিম ১/৩৯, ৪০,৪৭।

ঈমানের স্বাদ

কেউ যখন কোনো খাদ্য দ্রব্য গ্রহণ করে তখন বস্তুটির স্বাদ জানতে পারে। কোনো খাবার মিষ্টি, কোনটি টক, আবার কোনটি জ্বাল। তাহলে স্বাদ নিয়ে বস্তুটির প্রকৃত পরিচয় জানা যায়।

কেউ ঈমান আনয়নের পর যদি নীচের স্বাদ পায় তাহলে বুঝা যাবে তাঁর মাঝে ঈমান আছে।

মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্ন (র)… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

তিনটি গুন যার মধ্যে থাকে, সে ঈমানের স্বাদ পায়ঃ

১. আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্যসব কিছু থেকে প্রিয় হওয়া।

২. কাউকে খালিস আল্লাহ্‌র জন্যই মুহাব্বত করা।

৩. কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করা।

বুখারী শরীফ হা/১৫ (ই.ফা.বা)

ঈমানের শাখা সমূহ

ঈমানের শাখা সম্পর্কে কুরআন ও সহীহ হাদীস থেকে যে সকল তথ্য পাওয়া যায় সেগুলো বিচার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, ঈমানের শাখার সংখ্যা নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা ( number) এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

কোনো হাদীসে ঈমানের শাখা ষাটের কিছু বেশী বলা হয়েছে। আবার অন্যএক হাদীসে দেখা যায় ঈমানের শাখার সংখ্যা সত্তরটির চেয়ে বেশী। তবে ষাটের কম কিংবা আশির বেশী এরকম তখ্য পাওয়া যায় না।

 দলিল

ঈমানের শাখা সমূহ হাদীস০১

আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ জু’ফারী (র.)……। আবূ হূরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

ঈমানের শাখা ষাটের কিছু বেশী। আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।

বুখারী শরীফ হা ০৯ (ই.ফা. বা), মুসলিম ৩৫, আহমেদ ৯৩৭২

ঈমানের শাখা সমূহ হাদীস ০২

আবূ হূরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

ঈমানের শাখা সত্তরটির চেয়েও বেশী আর লজ্জা শরম ঈমানের একটি শাখা।

মুসলিম হা.৫৯(ই.ফা.বা.)  

ঈমানের শাখা সমূহ হাদীস০৩

আবূ হূরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

ঈমানের শাখা সত্তরটির কিছু বেশী অথবা ষাটের কিছু বেশী এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে, আল্লাহ্‌ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই একথা স্বীকার করা, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা, আর লজ্জা ঈমানের একটি বিশেষ শাখা।

মুসলিম হা.৬০ ( ই.ফা.বা.)

ইমাম বাইহাকী ঈমানের শাখা সমূহকে ৭৭ টি ভাগে ভাগ করেছেন। ৭৭ টি শাখাকে ৩টি ভাগে বিভক্ত করেছেন যা ঈমানের সংজ্ঞার সাথে সম্পৃক্ত ।

                                        

 ১. হৃদয় দ্বারা সম্পন্ন হয় -৩০টি

  ২.মূখের দ্বারা সম্পন্ন হয় -৭টি

  ৩. বাহ্যিক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দ্বারা সম্পন্ন হয় -৪০ টি

ঈমানের শাখাসমূহ বিস্তারিত

১. আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনাঃ

আল্লাহ্‌ বলেন,

হে ইমানদার লোকেরা! তোমরা ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রাসূলের প্রতি যা তিনি নাযিল করেছেন তাঁর রসূলের কাছে এবং ঐ কিতাবের প্রতিও যা তিনি নাযিল করেছেন তাঁর পূর্বে।——

                         সূরা নিসা ৪:১৩৬

সূরা বাকারাতে আল্লাহ্‌ বলেন,

…… তাদের প্রত্যেকেই ঈমান এনেছে আল্লাহ্‌র প্রতি, তাঁর ফেরেশতার প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর রসূলদের প্রতি। ……

                      সূরা বাকারা ২:২৮৫

২. ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনাঃ

সূরা বাকারাতে আল্লাহ্‌ বলেন,

…… তাদের প্রত্যেকেই ঈমান এনেছে আল্লাহ্‌র প্রতি, তাঁর ফেরেশতার প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর রসূলদের প্রতি। ……

সূরা বাকারা ২:২৮৫

৩. আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনাঃ

আল্লাহ্‌ কুরআনে বলেন,

হে ঈমান্দার লোকেরা! তোমরা ঈমান আনো আল্লাহ্‌র প্রতি এবং তাঁর রসূলের প্রতি, আর সেই কিতাবের প্রতি যা তিনি নাযিল করেছেন তাঁর রসূলের কাছে……………

                         সূরা নিসা ৪:১৩৬

৪. রাসূলগনের প্রতি ঈমান আনাঃ

আল্লাহ্‌ কুরআনে বলেন,

হে ঈমান্দার লোকেরা! তোমরা ঈমান আনো আল্লাহ্‌র প্রতি এবং তাঁর রসূলের প্রতি, আর সেই কিতাবের প্রতি যা তিনি নাযিল করেছেন তাঁর রসূলের কাছে……………

                         সূরা নিসা ৪:১৩৬

৫. আখিরাতের প্রতি ঈমান আনাঃ

আল্লাহ বলেন,

যাদের প্রতি ইতোপূর্বে কিতাব নাযিল করা হয়েছিল তাদের মধ্যে যারা ঈমান আনেনা আল্লাহ্‌র প্রতি, আখিরাতের প্রতি এবং আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূল যা কিছু হারাম করেছেন, তা হারাম হিসেবে মানে না, আর সত্য দীনের আনুগত্য আনুসরন করে না, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো, যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা ন্ত হয়ে নিজেদের হাতে জিজিয়া( নিরাপত্তা কর) না দেবে।

                      সূরা তাওবা ৯:২৯

৬. তাকদীরের প্রতি ঈমান আনাঃ

মানুষের পাওয়া না পাওয়ার হিসাব করে থাকে প্রতিনিয়ত। সব কিছু আল্লাহ্‌ কর্তৃক নির্ধারিত। আল্লাহ্‌ যা নির্ধারণ করে রেখেছেন সেটার বেশী বা কম পাওয়া যাবে না।

আল্লাহ বলেন,

বলুন সব কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে।

                           সূরা নিসা ৪:৭৮

৭. পুনরুত্থানের প্রতি ঈমান আনাঃ

মৃত্যুর পর সবাইকে আবার জীবিত করা হবে এ বিশ্বাস রাখতে হবে।

আল কুরআনে আল্লাহ্‌ বলেন,

কাফিররা ধারণা করেছে, তাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে না । তুমি বলোঃ হ্যাঁ অবশ্যি পুনরুত্থান করা হবে। আমার প্রভুর শপথ ! তারপর তোমরা যা করতে, তোমাদের অবশ্যি তা অবহিত করা হবে । এটা করা আল্লাহ্‌র জন্য খুবই সহজ।

                     সূরা আত তাগাবুন ৬৪:৭

৮. হাশরের ময়দানের প্রতি ঈমান আনাঃ

হাশরের ময়দানের প্রতি ঈমান আনতে হবে। যা আল্লাহ্‌ তায়ালা কুরআনে বলেন,

এরা কি ভাবেনা যে, (মৃত্যুর পর) এদের পুনরায় উঠিয়ে আনা হবে, এক মহাদিবসে এটা হবে সেই দিন , যে দিন সমস্ত মানুষ দাঁড়াবে রাব্বুল আলামিনে সামনে।

সূরা আল মুতাফফিফীন ৮৩:৪-৬

৯. মুমিনের জন্য জান্নাত ও কাফিরের জন্য জাহান্নাম এবিষয়ে বিশ্বাস রাখা-

মৃত্যুর পর মুমিনের জন্য পুরস্কার স্বরূপ জান্নাত ও কাফিরের জন্য শাস্তি স্বরূপ জাহান্নামের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এ বিশ্বাস রাখা ঈমানের শাখা।

আল্লাহ্‌ বলেন,

হ্যা, যারাই কামাই করে পাপকর্ম এবং তাদের ঘেরাও করে ফেলে তাদের পাপরাশি, তাঁরাই হবে আসহাবুননার( আগুনের অধিবাসী), যেখানে ( আগুনের মধ্যে) থাকবে তাঁরা চিরকাল। অন্যদিকে , যারা ঈমান আনে এবং আমলে সালেহ করে, তারা হবে আসহাবুল জান্নাহ ( জান্নাতের অধিবাসী) সেখানে  থাকবে তারা চিরকাল।

                    সূরা বাকারা ২:৮১-৮২

১০. আল্লাহ্‌র প্রতি গভীর ভালবাসা ঈমানের শাখা-

আল্লাহ্‌কে গভীর ভালবাসা ঈমানের একটি অংশ।যা কারো সাথে তুলনা করা যাবে না। আল্লাহ্‌কে সবার চেয়ে সবকিছু থেকে বেশী ভালবাসতে হবে।

আল্লাহ্‌ বলেন,

 মানুষের মধ্যে এমনও রয়েছে যারা অন্যকে আল্লাহ্‌র মত মনে করে এবং তাদেরকে সেই রকম ভালবাসে যেমন ভালবাসা হয় আল্লাহ্‌কে। অথচ যারা ঈমানদার তারা আল্লাহকেই সবচেয়ে বেশী ভালবাসে।

                       সূরা বাকারা ২:১৬৫

১১. আল্লাহ্‌র ভয় মনে সর্বদা জাগ্রত থাকা ঈমানের শাখা

আল্লাহ্‌র ভয় মনে সদাসর্বদা রাখতে হবে, কোন কাজ করা আগে ভাবতে আল্লাহ্‌ আমাকে দেখতেছে। মনকে পাহারা দিতে হবে ।

আল্লাহ্‌ কুরআনে বলেন,

এটা ছিলো শয়তানের কাজ, সে ভয় দেখায় তার বন্ধুদের। কখনো ভয় করো না । মুমিন হয়ে থাকলে তোমরা কেবল আমাকে ভয় করো।

                     সূরা আল ইমরান ৩:১৭৫

১২. আল্লাহ্‌র প্রতি সুধারনা রাখা ঈমানের শাখা

আল্লাহ্‌র প্রতি সবসময় সুধারনা রাখতে হবে। কোন কাজের ফলাফল ভালো মন্দ যাই হোক আল্লাহ্‌র প্রতি সুধারনা রাখতে হবে।

আল্লাহ্‌ বলেন,

আর যারা ঈমান আনবে এবং আমলে সালেহ করবে, তিনি তাদের পুরোপুরি দিয়ে দেবেন তাদের প্রতিফল। আল্লাহ্‌ যালিমদের পছন্দ করেন না।

                      সূরা আল ইমরান ৩:৫৭

১৩. আল্লাহ্‌র প্রতি নির্ভরতা ঈমানের শাখা

কোন অলি, পীর, বাবা যে যে নামেই ডাকুক তাদের কারোর উপর নির্ভর করা যাবে না। নির্ভর করতে হবে একমাত্র আল্লাহ্‌র উপর।

আল্লাহ্‌ কুরআনে বলেন,

এবং তাকে রিযিক দেবেন এমন উৎস থেকে যা সে ধারনাই করেনি। যে কেউ তাওয়াক্কুল করবে আল্লাহ্‌র উপর, তিনিই তার জন্যে যথেষ্ট। আল্লাহ্‌ তাঁর সিদ্ধান্ত বাস্তাবায়ন করবেনই। ত্নি প্রতিটি বস্তুর জন্যে নির্ধারণ করেছেন পরিমাণ ও মাত্রা।

সূরা তালাক ৬৫:৩

অনুরূপ সূরা মায়িদা ৫:২৩

সন্তানকে গড়তে পড়ুন-

সন্তানঃ স্বপ্নের পরিচর্যা

সন্তানঃ স্বপ্নের পরিচর্যা – মির্জা ইয়াওয়ার বেগ

১৪. রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে  ভালবাসা ঈমানের অংশ –

আমরা হদীস থেকে জানতে পারি,

আবূল ঈয়ামান (রহ.)…… আবূ হূরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ সেই পবিত্র সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তাঁর কাছে পিতা ও সন্তানের চেয়ে বেশী প্রিয় হই।

                 সহীহ বুখারী হা.১৩ (ই.ফা.বা)

১৫. রাসূল (সাঃ) কে শ্রদ্ধা ও সম্মান করা

আল্লাহ্‌ বলেন-

রসূলকে সাহায্য ও সম্মান করো।

সূরা ফাতাহ ৪৮:৯

অনুরূপ আরাফঃ১৫৭,নুরঃ৬৩,হুজরাতঃ১-২

১৬. ইসলামের উপর অটল থাকা

মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্ন (র)… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

তিনটি গুন যার মধ্যে থাকে, সে ঈমানের স্বাদ পায়ঃ

১. আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্যসব কিছু থেকে প্রিয় হওয়া।

২. কাউকে খালিস আল্লাহ্‌র জন্যই মুহাব্বত করা।

৩. কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করা।

বুখারী শরীফ হা/১৫ (ই.ফা.বা)

১৭. জ্ঞান অর্জন করা

জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহ্‌কে চেনা ও জানা যায় এবং তাঁর আদেশ ও নিষেধ সমূহ পরিপালন করা যায়। আর এ কারণে জ্ঞান অর্জন করা ঈমানের অংশ।

আল্লাহ্‌ সুবহানাতায়ালা বলেন-

আল্লাহ্‌র বান্দাদের মধ্যে কেবল আলিমগনই আল্লাহ্‌কে ভয় করে।

                     সূরা ফাতির ৩৫:২৮

এবং সূরা যুমারে আল্লাহ্‌ বলেন-

যারা জানে এবং যারা জানেনা তারা উভয়ই কি সমান হতে পারে? যাদের জ্ঞান বুদ্ধি আছে নসিহত কেবল তারাই গ্রহণ করে থাকে।

সূরা যুমার ৩৯:৯

১৮. শিক্ষার প্রসার

শিক্ষার প্রচার ও প্রসার করার কথা আল কুরআনে বলা হয়েছে যা ঈমানের অংশ।

আল্লাহ্‌ বলেন-

স্মরণ করো , যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল আল্লাহ্‌ তাদের থেকে এই অঙ্গীকার নিয়েছিলেনঃ তোমরা তা ( তোমাদের প্রদত্ত কিতাব) মানুষের জন্যে প্রকাশ করবে এবং তা গোপন করবে না।“ কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা তা অগ্রাহ্য করে এবং আর বিনিময়ে তারা ক্রয় করে নগণ্য স্বার্থ। তারা যা ক্রয় করে তা কতো যে নিকৃষ্ট।

                    সূরা আল ইমরান ৩:১৮৭

১৯. আল কুরআন সম্মান করা

মহাগ্রন্থ আল কুরআন পড়া, নিজে শিক্ষা গ্রহণ করা অপরকে শিক্ষা দেওয়া এবং আল্লাহ্‌র আদেশ নিষেধ সমূহ পালন করার মাধ্যমেই আল কুরআনকে সম্মান করা হয়।

আল্লাহ্‌ বলেন,

নিশ্চয়ই এটি একটি সম্মানিত কুরআন। এটি রয়েছে সুরক্ষিত কিতাবে ( উম্মুল কিতাবে)

                            আল ওয়াকিয়া ৫৬:৭৭-৭৮

২০. পাক পবিত্রতা অর্জন করা

পাক পবিত্রতা অর্জন করা ঈমানের অংশ।

আল্লাহ্‌ বলেন,

হে ইমানদার লোকেরা! তোমরা যখন সালাতের জন্য উঠবে তখন ধুয়ে নিবে তোমাদের মুখমণ্ডল এবং তোমাদের হাত কনুই পর্যন্ত আর মাসহ করে নিবে তোমাদের মাথা এবং ধুয়ে নিবে তোমাদের পা টাকনু পর্যন্ত। কিন্তু তোমরা যদি অপবিত্র থাকো তাহলে ( আগেই) পবিত্র হয়ে নেবে।

                      সূরা মায়েদা ৫:৬  

২১. সালাত কায়েম করা ঈমানের শাখা

আল্লাহ্‌ মহাগ্রন্থ আল কুরআনে সালাত কায়েমের জন্য অনেক জায়গায় নির্দেশ দিয়েছেন।প্রতি মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য সঠিক সময় সালাত আদায় করা। মুসলিম এবং অমুসলিমের পার্থক্যকারী হচ্ছে সালাত।

আল্লাহ্‌ বলেন,

নির্ধারিত সময়ে সালাত কায়েম করা মুমিনের জন্য এক লিখিত বিধান।

                            সূরা নিসা ৪:১০৩

2য় পর্বে সমাপ্ত

তাহাজ্জুদ

তাহাজ্জুদ সালাতের নিয়ম, ফযিলত ও গুরুত্ব

2 thoughts on “ঈমানের শাখা সমূহ-১ম পর্ব”

  1. Pingback: ঈমানের শাখা সমূহ-২য় পর্ব - islamic world

  2. Pingback: অহংকার মানব জীবন ধ্বংসের অন্যতম কারণ - islamic world

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *