আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে আমদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর দীর্ঘ ২৩ বছর কুরআন নাযিল হয়। কুরআন নাযিলের এতো বছর পরেও আজও অবিকৃত অবস্থায় আছে, কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে ।কুরআনের চ্যালেঞ্জ কেউ নিতে পারেনি । পৃথিবীতে কোনো গ্রন্থ নেই যার কোনো সংশোধন হয়নি। লেখক নিজেই শুরুতে বলে থাকেন তাঁর লেখাতে কোনো ভুল ত্রুটি থাকলে তাকে অবহিত করতে। আল্লাহ্ তা’লা ভুলের উর্ধে থেকে বলেন –
ইহা ঐ গ্রন্থ যার মধ্যে কোন সন্দেহ- সংশয়ের অবকাশ নেই। ধর্মভীরুদের জন্য এ গ্রন্থ পথ নির্দেশ।
(সূরা বাকারা, ২:২)
এ পোস্টের অনুচ্ছেদ সমূহ
- কুরআন সংরক্ষক-আল্লাহ
- কুরআনের চ্যালেঞ্জ -সমগ্র মাখলুকের জন্য
- কুরআনের চ্যালেঞ্জ-দশটি টি সূরা রচনার
- কুরআনের চ্যালেঞ্জ-১ টি সূরা রচনার
কুরআন সংরক্ষক-আল্লাহ
যে গ্রন্থের শুরুতে বলা হয়েছে – কোনো সন্দেহ নেই , ভুল সেখানে অসম্ভব । সময় যতো পরিবর্তন হোক , প্রযুক্তি যতো আধুনিক হোক কুরআন ততো আধুনিক হবে । এ গ্রন্থ কখনো পুরাতন হবে না , হারিয়ে যাবে না। কারণ কুরআন সংরক্ষণ করা দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন।
তাই কুরআনে আল্লাহ্ বলেন-
নিশ্চয় আমিই কুরআন নাযিল করেছি আর অবশ্যই আমি তার সংরক্ষক।
( সূরা হিজর, ১৫:৯)
এই পোস্টে কুরআন সম্পর্কে আরো জানতে পারেন
কুরাআন শুধু গ্রন্থ আকারে পৃথিবীতে নেই, কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আছে। যার কারণে কখনো হারিয়ে যাবে না । এই প্যারালাল সিস্টেম থাকার কারণে পরিবর্তন, পরিবর্ধন , পরিমার্জন করা সম্ভব নয়।
কুরআনের চ্যালেঞ্জ -সমগ্র মাখলুকের জন্য
কুরআন কোনো মানুষের তৈরি করা গ্রন্থ নয়। কুরআনের মতো গ্রন্থ মানুষ, জিন এক সাথে চেষ্টা করলেও তৈরি করা সম্ভব নয়। সে কথা আল্লাহ্ তা’আলা কুরআনে বলেন-
বলঃ যদি এই কুরআনের অনুরূপ কুরআন আনয়নের জন্য মানুষ ও জিন সমবেত হয় এবং পরস্পরকে সাহায্য করে তবুও তারা এর অনুরূপ কুরআন আনয়ন করতে পারবে না ।
( সূরা ইসরা , ১৭:৮৮ )
কুরআন আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো রচনা হলে এর মধ্যে অনেক অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হতো এবং অনেক তখ্য ভুল পাওয়া যেতো যা বাইবেলে দেখতে পাই ।
কুরআনের চ্যালেঞ্জ-দশটি টি সূরা রচনার
কুরআন তার আলো দিয়ে পৃথিবীর মানুষকে আলোকিত করছে। কিছু মানুষ এ আলো নিতে আগ্রহী নয়। তাদের উদ্দেশ্যে কুরআন বলে –
অথবা এরা কি ( একথা) বলে (মোহাম্মদ নামের) সে (ব্যক্তি কুরআন) নিজে নিজে রচনা করে নিয়েছে! ( হে নবী) তুমি (তাদের) বলো , তোমরা (যদি তাই মনে করো) তাহলে নিয়ে এসো এর অনুরূপ (মাত্র) দশটি (তোমাদের স্বরচিত) সূরা এবং আল্লাহ্ তায়ালা ছাড়া অন্য যাদের সাহায্যের জন্যে ডাকতে পারো তাদের নাও, যদি তোমরা (তোমাদের দাবীতে )সত্যবাদী হও ।
(সূরা হুদ, ১১:১৩)
অবিশ্বাসীদের প্রতি আহ্বান করা হয়েছে – যত পারো সাহায্যকারি নাও কিন্তু কুরআনের মতো অনুরূপ গ্রন্থ রচনা করতে পারবে না । এটা কোনো ব্যক্তির রচনা হতে পারে না । যদি এটা কোনো মানুষের রচনা হতো তাহলে অনুরূপ আরো গ্রন্থ মানুষ রচনা করতে পারতো । পৃথিবীতে কুরআনের ন্যায় অনুরূপ কোনো গ্রন্থ আজও নেই কোনো দিন আসবেও না ।
কুরআনের চ্যালেঞ্জ-১ টি সূরা রচনার
অবিশ্বাসীদের আল্লাহ তা’আলা চ্যালেঞ্জ করলেন এর ন্যায় একটি গ্রন্থ নয়, একটি সূরা রচনা করতে বললেন –
আমি আমার বান্দার ওপর যে কিতাব নাযিল করেছি, তা(সত্যতার) ব্যাপারে যদি তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকে তাহলে যাও তার মতো (করে) একটি সূরা তোমরাও (রচনা করে ) নিয়ে এসো, এক আল্লাহ তায়ালা ছাড়া তোমাদের এর যে সব বন্ধুবান্ধব রয়েছে তাদেরও ( প্রয়োজনে সহযোগিতার জন্যে) ডাকো, যদি তোমরা তোমাদের দাবীতে সত্যবাদী হও!
(সূরা বাকারা ২:২৩)
আল্লাহ্ আরো বলেন-
তারা কি এরূপ বলে যে, এটা তার(নবীর) স্বরচিত ? তুমি বলে দাওঃ তাহলে তোমরা এর অনুরূপ একটি সূরা আনয়ন কর এবং গাইরুল্লাহ হতে যাকে ইচ্ছা ডেকে নাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও ।
(সূরা ইউনুস ১০:৩৮)
এটা আল্লাহর চ্যালেঞ্জ। কুরআনের অনুরূপ গ্রন্থ, দশটি সূরা, একটি সূরা এবং একটি আয়াতও মানুষের রচনা করা সম্ভব নয়। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন-
এরা কি বলতে চায় , সে (রাসুল) নিজেই (কোরআনের) এ কথাগুলো রচনা করে নিয়েছে, ( সত্য কথা হচ্ছে) এরা ঈমান আনেনা। তাঁরা (নিজেদের কথায় ) যদি সত্যবাদী হয় তবে তারাও এ (কোরআনে)-র মতো কিছু একটা (রচনা করে) নিয়ে আসুক না !
(সূরা তূর, ৫২:৩৩-৩৪)
কুরআন বিজ্ঞানময় গ্রন্থ।এটা মানুষের রচনা করা গ্রন্থ নয়। কেউ ইচ্ছা করলেও সামান্য পরিবর্তন করতে পারবে না, কারণ আল্লাহ্ নিজে একে সংরক্ষণ করবেন । কেয়ামত পর্যন্ত কুরআনের চ্যালেঞ্জ সবার জন্য থাকবে । কুরআন মানুষের জন্য একটি জীবন ব্যবস্থা । কুরআন আল্লাহ্ তা’লার বাণী। আমাদের সবাইকে কুরআন পড়া,শিখা এবং আমল করার তাওফিক দান করুন।